মোঃ তৌহিদুজ্জামানঃ সফলতার সাথে দীর্ঘ কর্মজীবন শেষে অবসর গ্রহণ করছেন কারিগরি শিক্ষা ভুবনের এক নক্ষত্র প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম। সৎ, মেধাবী, পরিশ্রমী ও দেশপ্রেমী জনাব মোঃ নজরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বাংলাদেশ-কোরিয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, চট্টগ্রাম থেকে দীর্ঘ ৩২ বছরের কর্মজীবন শেষে অবসর গ্রহণ করলেন। সফল এই মানুষটি ১৯৮৭ সালে যোগদান করে ২০১৪ সালের ১৪ জানুয়ারি থেকে অত্র প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।
প্রতিষ্ঠানে মোঃ নজরুল ইসলামের অবদান বেশ লক্ষ্যণীয়। ছাদের উপর এলইডি টিভি, অত্যাধুনিক তথ্য ডেস্ক, অনলাইন ভর্তি ব্যবস্থা, মোবাইল অ্যাপস, জব পোর্টাল, ডিজিটাল সাইনবোর্ড, থ্রিডি প্রিন্টার এর ব্যবহার অটোমোশন ল্যাব স্থাপন, শহীদ মিনার পূনঃনির্মান, অভারহেড লাইন পুনঃনির্মান, বিকেটিটিসি ঝর্ণা, কনফারেন্স রুম সজ্জা, অডিটরিয়াম মেরামত, ক্যাম্পাসের ভিতরে রাস্তা, বিদেশগামী কর্মীদের জন্য শেড তৈরী, বৃক্ষ রোপন, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতাসহ অনেক ব্যতিক্রমধর্মী কাজের সাথে মিশে আছে তাঁর অবদান।
নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন সহকর্মীদের নিকটাত্মীয় হিসেবে। কোন কর্মকর্তা/কর্মচারী যেকোন সমস্যায় থাকলে তিনি বেশিরভাগ সময়ে নীরবে সাহায্যে করেছেন এবং কেউ অসুস্ত হলে পরিবারের সদস্যের মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।
জীবনের এই ৫৯ বছর বয়সে এসেও তিনি পাঠদানের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। প্রতিষ্ঠানের কর্নধারের পরিচয় ভুলে গিয়ে আইটি, অটো ক্যাড, ম্যাকানিক্যাল ড্রয়িং, কোরিয়ান ভাষা সহ বিভিন্ন বিষয়ে শিখে পাঠদান করেছেন। বই পড়া তাঁর নেশা। ছাত্র/ছাত্রীদের পড়াতে গিয়ে তিনি ভাবলেন বই লেখার এবং তিনি কম্পিউটার বিষয়ে একটি এবং আত্মকর্মসংস্থান বিষয়ে আরও একটি বই লিখেছেন।
দক্ষ জনশক্তি অর্জনে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যে জাতীয় দক্ষতা সনদের যে কার্যক্রম চলছে তার অগ্রপথিক এই প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম।
দীর্ঘ কুড়ি বছর একসাথে কাজ করা আইটি বিভাগের সিনিয়র ইনস্ট্রাক্টর ও বিভাগীয় প্রধান প্রকৌ. গাজী ইকফাত মাহমুদ তাঁর সম্পর্কে জানায়, আমি কোন দিন দেখিনি তিনি সরকারের ১ টি টাকা অপচয় করেছেন। বরং আমার কাছে এমন অনেক উদাহরণ আছে যে তিনি ব্যক্তিগত টাকা দিয়ে সরকারের পক্ষে কাজ করেছেন।
প্রিয়জনের অসুস্থতার সময় তাকে কাছে পাওয়ার অনুভূতি হিসেবে তিনি বলেন, আমার ফ্যামিলি মেম্বার যা করে নাই সেটা তিনি করে দেখিয়েছেন।
প্রিয় মানুষটির অবসরগ্রহণের এ সন্ধ্যায় নেমে এসেছে বেদনার চাদর।